তৃতীয় বারের মতো ইউরোপের পথে সাতক্ষীরার হিমসাগর আম
মধু মাসের প্রথম দিনেই সাতক্ষীরার হিমসাগর আম গেল ইউরোপে। আর এর মধ্য দিয়েই আম রফতানিতে কৃষি বিভাগের প্রচেষ্টা তৃতীয়বারের মতো সাফল্যের মুখ দেখলো। গত সোমবার রাতে রফতানির প্রথম চালানেই জেলার দেবহাটা উপজেলার ছয়জন ও সদর উপজেলার তিন জন চাষির বাগানের হিমসাগর আম পাঠানো হলো ইউরোপের দেশ ফ্রান্স ও ইতালিতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাতক্ষীরার হিমসাগর ও ল্যাংড়া আমের কদর রয়েছে দেশের গন্ডি পেরিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। আমের গুণগতমান ঠিক রাখার পাশাপাশি পরিপক্কতা আনার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরায় ১৫ মে পর্যন্ত হিমসাগর ও ২৫ মে পর্যন্ত ল্যাংড়া আম পাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই গত সোমবার বিকেলে দেবহাটা ও সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত কয়েকজন চাষির বাগান থেকে হিমসাগর আম পাড়া হয় ইউরোপের দেশে পাঠানোর জন্য। আম পেড়ে বাগানেই প্যাকেটজাতকরণের পর রাতে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানসমূহ তা নিয়ে রওনা হয় বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে।
এর আগে গুণগতমানসহ যাবতীয় প্রক্রিয়া তদারকি করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মোঃ মহিউদ্দিন, সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর আহমেদ সজল, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনসহ অন্যান্যরা।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, প্রথম চালানে দেবহাটা উপজেলা থেকে ৩ হাজার ৫’শ ৯৪ কেজি ও সদর উপজেলা থেকে ৩ হাজার ৬শ’ ৮৯.৬ কেজি হিমসাগর আম রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান তাসিন এন্টারপ্রাইজ ও হক এন্টার প্রাইজের মাধ্যমে ইতালি ও ফ্রান্সে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা শহরের কামালনগরের আম চাষি জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত মৌসুমের পর থেকেই কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিষমুক্ত রফতানিযোগ্য আম উৎপাদনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। আজ তার সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। প্রথম দিনেই তার বাগান থেকে প্রায় দুই মেট্রিক টন আম রফতানি করা সম্ভব হয়েছে। অন্যান্য চাষিদের তুলনায় বেশি দাম পেয়ে উচ্ছ্বসিত জাহাঙ্গীর আলম আরও জানান, বর্তমানে বাজারে হিমসাগর আম দুই হাজার থেকে ২২শ’ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু আমার আম বাগান থেকেই আড়াই হাজার টাকা মণ বিক্রি হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান জানান, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে তৃতীয়বারের মতো আম রফতানি শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহে সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা, তালা ও কলারোয়া উপজেলা থেকে আরও আম রফতানি হবে। সাতক্ষীরা থেকে এ বছর আম রফতানির লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১শ’ ৫০ মেট্রিক টন। তিনি আরো জানান, বিদেশে আম রফতানির মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে।
Comments
- No comments found
Leave your comments