গাছে গাছে আম্রপালি-হাড়িভাঙ্গা
রাজশাহীর আম এখন রাউজানের টিলা ভূমিতে। আগে নেঁড়া হয়ে থাকা টিলাগুলোতে এখন সারি সারি আম গাছ। বিশাল বিশাল টিলা ভূমির সারি সারি আম গাছে ঝুলছে হরেক প্রজাতির আম। বাগানের প্রতিটি গাছের উচ্চতা পাঁচ থেকে সাত ফুট। বাগানের সব গাছের ডালপালা নিচের দিকে ঝুলে আছে আমের থোকা নিয়ে। গাছ ভর্তি ফলন দেখে বাগান মালিকরা এখন আনন্দে আত্মহারা। কৃষকরা আশায় বুক রেঁধেছেন আগামী মাসে বাগানের আম পাকা শুরু হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পরিশ্রমের ফল ঘরে উঠানো যাবে। রাউজানের পৌরসভা এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাওলানা মোহাম্মদ এনাম সখের বশে পার্শ্ববর্তী হলদিয়া ইউনিয়নের রাধামাধবপুর এলাকায় আম বাগান করেছেন তার মালিকানাধীন পরিত্যক্ত দুই একর নেঁড়া টিলা ভূমিতে। ২০১১ সালে তিনি গাছের চারা লাগালেও এখন প্রতিটি চারা গাছে ঝুলছে থোকা থোকা আম। বাগানে আমের ফলন দেখে এনামের মুখে এখন সাফল্যের হাসি। বাগান পরিদর্শনকারীদের মধ্যে তিনি যাকে পাচ্ছেন তাকেই পরিচয় দিচ্ছেন তার বাগানের গাছে গাছে ঝুলন্ত আমের সাথে। এনামের বাগানে এখন ঝুলছে আম্রপালি, হাড়িভাঙ্গা আর রূপালী জাতের আম।
মাওলানা এনাম জানিয়েছেন, তিনি দুই একর টিলায় আম বাগান করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন রাউজান উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের কথায়। তার ব্যবস্থাপনায় সংগ্রহ করা হয় তিনশ’ চারা। প্রথম বছরে গাছে মুকুল এলেও কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে মুকুল ভেঙ্গে দেয়া হয়। তৃতীয় বছরে সাফল্যের হাসি হেসে গাছে গাছে আসে আবার মুকুল। সেই মুকুল থেকে এখন আমের কাংঙ্খিত ফলন। তবে এনামের মনে ক্ষোভ প্রকৃতির উপর। হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ায় তার গাছের অনেক আম ফুলের মধ্যে ঝড়ে পড়েছে। আবহাওয়ার এই বিরূপ প্রভাব না পড়লে বাগানের ফলের সৌন্দর্য্য আরো বৃদ্ধি পেতো বলে তার ধারণা।
সফল এই আম চাষী এনাম তার আম বাগানের পাশে আরো একটি বাগান সৃষ্টি করেছেন। এই বাগানে তিনি লাগিয়েছেন লিচু, জলপাই, কমলা, মালটা, লেবু চারা। তার আশা এই বাগান থেকেও আমের মত ফলন পাওয়া যাবে। তিনি বলেছেন, সরকারি সহায়তা পেলে তার মালিকানাধীন পরিত্যক্ত হয়ে থাকা আরো পাঁচ-সাত একর টিলা ভূমিতে উন্নত জাতের ফলজ বাগান করতে পারবেন। এ জন্য সহায়তা দিতে হবে ব্যাংক ঋন দিয়ে। কৃষকরা এই সহায়তা পেলে রাউজানের অনেক কৃষক বিভিন্ন জাতের ফল চাষে বিপ্লব ঘটাতে পারবে বলে তিনি আশাবাদী। উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেছেন, রাউজানে আম চাষের উজ্জল ভবিষৎ রয়েছে। এখানকার শত শত একর পরিত্যক্ত টিলা ভূমিতে আম ও লিচু বাগান করলে বিশাল ফলন পাওয়া যাবে। যা থেকে এ অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
Comments
- No comments found
Leave your comments