সাপাহারের আম বিভিন্ন দেশে রপ্তানীর সম্ভাবনা
দেশের ঠাঁঠাঁ বরেন্দ্র হিসেবে খ্যাত নওগাঁর সাপাহারের উৎপাদিত আম বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করার জোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে, এ আম যদি বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হয় তাহলে দেশ অনেকাংশে দারিদ্র মুক্ত হবে। যার জন্য বাংলাদেশ কৃষিমন্ত্রনালয় ও রপ্তানী বিভাগের ডেপুটি ডাইরেক্টর মোঃ আনোয়ার হোসাইন সম্প্রতি সাপাহারে এক সফরে এসে উপজেলার বিভিন্ন আম বাগান পরিদর্শন করেছেন। বিগত কয়েক বছর ধরে সাপাহারে ব্যাপক হারে ফজলী, লক্ষনা, খিরশাপাতি, লেংড়া, গোপালভোগ ও হাইব্রিড, আম্রপলি (রুপালী) আমের চাষ হয়ে আসছে। অতীতে চাপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আমের রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করা হত। বর্তমানে নওগাঁ জেলার সাপাহার, পোরশা উপজেলায় যে পরিমানে বিভিন্ন জাতের আম উৎপাদন হয়ে থাকে তা চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার চেয়ে কোন অংশে কম নহে। কয়েক বছর ধরে চাপাই নবাবগঞ্জের মানুষকে আমের মৌসুমে সাপাহার হতে আম কিনে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। তারা সাপাহারের আম চাপাইনবাবগঞ্জে নিয়ে গিয়ে চাপাইনবাবগঞ্জের আম বলে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেছে বলেও জানা গেছে। সাপাহারের মাটি হাই-ব্রিড আম্রপলি আম চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার মানুষ বর্তমানে ধানের আবাদ ছেড়ে দিয়ে আম চাষে ঝুঁকে পড়েছে। উপজেলার আমচাষী দেলোয়ার হোসেন, মমিনুল হক, শাহজাহান আলী, মনছুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম সহ একাধীক আমচাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে ধানের বাজারে ধস নামায় ধান চাষ করে কৃষকদের লোকশান গুনতে হত। তাই ধান চাষ বাদ দিয়ে তারা তাদের আবাদী জমিতে হাইব্রিড সহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ করে প্রতি বিঘা জমিতে ধানের তুলনায় কয়েক গুন টাকা লাভ হওয়ায় সকলেই এখন আম চাষে মনোনিবেশন করেছেন। বর্তমানে দিন দিন পুরো উপজেলায় আমের বাগান বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান চাষের জমি খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের জরিপ মতে বর্তমানে পোরশা ও সাপাহার উপজেলায় প্রায় ১৫হাজার হেক্টোর জমিতে হাইব্রিড সহ বিভিন্ন জাতের আম গাছ রোপন করা হয়েছে। যে হারে আম বাগানের সংখ্য বেড়ে চলেছে অল্প সময়ের মধ্যে তা লক্ষাধিক হাজার বিঘায় পরিনত হবে। এছাড়া এবারে আবহাওয়া আম চাষের অনুকুলে থাকলে প্রতি হেঃ বাগানে ১০টন হিসেবে এবারে কম পক্ষে দেড় লক্ষ টন বা ৪০লক্ষ হাজার মন আম উৎপন্ন হবে। উপজেলায় দিন দিন আমের বাগান বৃদ্ধি পেলেও আম চাষীদের উন্নয়নে এখানে কোন জুস,জেলী বা আম সংরক্ষনাগার না থাকায় প্রতি বছর আম চাষীরা অনেক ঝুঁকি নিয়ে আম চাষ করে থাকেন। তাই অনেক আম চাষীদের দাবি এই উপজেলায় একটি আম সংরক্ষনাগার । সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহাদ পারভেজ বসুনীয়া দেশের রপ্তানী অফিসে যোগাযোগ করে ডেপুটি ডাইরেক্টর আনোয়ার হোসেনকে সাপাহারে আম বাগান পরিদর্শনে আনেন। সম্প্রতি তিনি সাপাহার উপজেলা কৃষি অফিসে এসে নির্বাহী অফিসার, ফাহাদ পারভেজ বসুনীয়া, কৃষি অফিসার এএফএম গোলাম ফারুক হোসেনকে সাথে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন আম বাগান পরিদর্শন করেন এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাগানের প্রতিটি আম ব্যাগিং পরিমিত কিটনাশকের ব্যাবহার সহ বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করার পরামর্শ দেন এবং তিনি সাপাহারের আম বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করার আশ্বাস প্রদান করেন। অনেকেই তার পরামর্শে তাদের আমবাগান পরিচর্যার কাজ শুরু করেছেন বলে বাগান মালিকগন জানিয়েছেন
Comments
- No comments found
Leave your comments