আম কুড়াতে সুখ, কার না সুখ লাগে আম কুড়াতে। আর সেটা মামার বাড়ী হলে তো আর কথাই নেই। পল্লী কবি জসীম উদ্দিন আম কুড়িয়ে সুখ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তার কবিতায়….
“ঝড়ের দিনে মামার দেশে
আম কুড়াতে সুখ
পাকা জামের শাখায় উঠি
রঙিন করি মুখ”
কখনো মেঘলা কখনো ফর্সায় রূপ বদলায় সে দিনটির আকাশ। এর পর টুপটাপ শব্দ সাথে হালকা বাতাশ। নাহ সব তো ঠিক হয়ে গেল। আবার ঐ তো দেখা যাচ্ছে কি যেন ধেয়ে আসছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন করে ফেলছে পুরো পৃথিবীকে। এর পরিচয় নাকি কাল বৈশাখী ঝড়।
উড়িয়ে নিচ্ছে রাস্তায় পরে থাকা কাগজের টুকরো। চিঁড়ে ফেলছে গাছের পাতা। ধুলো-বলির এক স্তর জমে গেল ঘরের মেঝেতে। টেবিলেও বাদ নেই। কাল বৈশাখি ঝড় করো জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ালেও নাগরিক মনে একটু শন্তির পরশ বুলিয়ে দিতে দ্বিধা নেই তার।
বৈশাখ মাসে এরকম কত ঝড় যে হয় তার অন্ত নেই। মজার বেপার হলো ঝড়ের পর আম কুড়াতে যাওয়া। গ্রামের ছেলে মেয়েরা একাজটি কত যে অান্দের সাথে করে থাকে তা শুধু আম কুড়াতে গেছে যারা তারাই জানে। নিজেদের গাছ হলেতো কিছুই না। অন্যদের গাছের নিছে গিয়েও আম কুড়ানো হয়। মাঝে মধ্যে ঢিল ছুরে ভৌ দৌঁড়। গাছওয়ালাদের বকনিরও কমতি নেই।
নগরায়নের এ সময় কাক ডাকা শহরের শিশুদের আম কুড়াতে যাওয়ার কথা শুধু বইতে পড়েই সীমাবদ্ধ থাকতে হয়। তারা আম কুড়ানোর সুখ থেকে অনেক দুরে। যাদের বাড়ীতে আম গাছ আছে তাঁরা এই ঝড়ের পরেই কাচা আম কুড়িয়ে থাকে। সেই কাচা আমের আচার, ভর্তা, ডালের সাথে আম বিভিন্ন ভাবে খেতে অভ্যস্ত। আমের আচার যেন দুমুঠো ভাত বেশি খেতে অনেক সাহায্য করে।
কাঁচা আমে রয়েছে আঁশ, যা পাকস্থলীসহ পেটের অন্যান্য অঙ্গ (ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র) ভালো রাখে। কাঁচা আম চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এর উচ্চমাত্রার ভিটামিন এ চোখের জন্য ভীষণ দরকারি। লবণ, কাঁচা মরিচ দিয়ে কাঁচা আম হতে পারে ভিটামিন সি-এর পূর্ণ মিশ্রণ। ত্বকের ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার দুঃসাহসী শক্তি রয়েছে কাঁচা আমের।